Bivas Chakrabarty : Sakkhatkar

Home  »     »   Bivas Chakrabarty : Sakkhatkar
Sale!

Bivas Chakrabarty : Sakkhatkar

540.00

10% OFF

Edited by Sekhar Samadder
Published by Mouhari

  • Publication House
  • Mouhari
Category: Tags: ,

Sample Pages

Description

দেবাশিস :

ভিয়েতনাম যখন লিখছেন তখন আপনার তিরিশের কোঠায় বয়স। অর্থাৎ তখনই কিন্তু কোথাও জোছনদার নাটকটা দেখার পর আপনার মনে হয়েছে আর একটা নাটক লেখার দরকার। এই যে লেখা দরকার আপনার মনে হয়েছে উৎপল দত্ত থাকা সত্ত্বেও, আজকে আমরা অনুজ নাট্যকর্মীরা মনে করি, আপনার একটা অন্যতম সোপান তৈরি হয়েছে একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। ভিয়েতনাম নাটকটার ক্ষেত্রে আপনার মনে হয়েছিল সেই সময় শুধুমাত্র কি একটা আন্তর্জাতিক ঘটনাকে নিয়ে লেখবার ইচ্ছে নাকি আজকের ভারতবর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে ভিয়েতনামকে আর একবার দেখবার ইচ্ছে? কোন জায়গাটা আপনাকে আঘাত করেছিল?

বিভাস :

আমি ভিয়েতনাম বিষয়ে কিছু পড়াশুনো করেছিলাম, তাতে দেখেছিলাম সাধারণ মানুষ একটা দেশের, পশ্চাৎপদ একটা দেশে সাধারণ মানুষরা কী করে একটা বিপুল শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে। এই লড়াইটা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। এটা তো ইতিহাস। আমি তো ছোটবেলায় যেভাবে মানুষ হয়েছি, দেখেছি এই লড়াইটা— চোখের সামনে দেখেছি। আমার বাবা একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, মা জেলে গেছেন, আমার মামারা সশস্ত্র বিপ্লবী। এক মামা আন্দামান গেছেন এক মামা পুলিশের অত্যাচারে মারা গেছেন, বাবা গন্ধীবাদী নেতা। আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, আমি দেখেছি। আমি যদি একাত্ববোধ করি ভিয়েতনামের মানুষের সঙ্গে, আমার মতো করে, বাঙালি বিভাস চক্রবর্তী হিসাবে, ভারতীয় বিভাস চক্রবরতী হিসাবে, তাহলে আমাকে এমনভাবে সেটা নিয়ে আসতে হবে যে, আমি দেখতে পাব আমার দেশ, মানুষ এবং তাদের লড়াই। তাদের আত্মার মধ্য, মায়ের মধ্যে, সেই ছেলেটার মধ্যে, মা-ছেলের সম্পর্কের মধ্যে, ছেলেটা যাকে ভালোবাসত সেই মেয়েটার সম্পর্কের মধ্যে কিংবা ওই মহিলার মতে স্বামীর বন্ধু, যিনি হো-চি-মিনের একটা প্রতিচ্ছবি, সেই ভদ্রলোকের মধ্যে আবিষ্কার করি আমার দেখা জগৎটা। তুমি আমার বাবার কথা বললে— আমরা দেশভাগের আগে একবারই কলকাতায় বেড়াতে এসেছিলাম, ১৯৪৬ সালে। তখন আমাদের চোখের সামনে রসিদ আলি দিবসটা হয়েছিল। তখন আমার বয়স ৯ বছর। নীলমণি মিত্র স্ট্রিটে ছিলাম। সেখানে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে, লোকে দৌড়োচ্ছে, আবার লোক জড়ো হচ্ছে, আবার হামলা করছে। অতটা বুঝতাম না। দেশে অর্থাৎ সিলেটে ফিরে গিয়ে বাবা একটা নাটক লিখলেন ‘রক্তের লেখা’। ১৯৪৭ সালে সাহিত্য সম্মেলন হল, সেবারে গিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ বন্যোপাধ্যায়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাবার ‘রক্তের লেখা’ দেখে দারুণ প্রশংসা করলেন। কথাগুলো আমার মনে নেই, তবে আমার ভাইয়ের কাছে তাঁর সেই লেখাটা আছে। তারও আগে আমি পাড়াতে দেখছি উত্তরা, কারাগার, কর্ণার্জুন হচ্ছে। আমার বাবার লেখা নাটকও ছেপে বেরিয়েছে। কলকাতার একটা প্রকাশন সসস্থা থেকে বেরিয়েছে ‘রাজমাতা’, ‘পরিচয়’, ‘সংঘাত’। ‘রাজমাতা’ রামায়ণের কাহিনি নিয়ে। কৈকেয়ীকে অন্যরকমভাবে, অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, আঁকার চেষ্টা হয়েছিল ‘রাজমাতা’ নাটকে। ছোটবেলায় ওই নাটকগুলো পড়তাম। ডি এল রায়-এর নাটকও পড়ি, বুঝি কি না বুঝি। আমার বাবার নাটকের মধ্যে রামায়ণ-মহাভারতের ওই ক্লাসিক্যাল ব্যাপারটাও রয়েছে আবার সমসাময়িক ঘটনা রসিদ আলি দিবসও কিন্তু উঠে এসেছে। যা কিছু আমার জীবনের চারপাশে ঘটছে বা আগে ঘটে গেছে সেগুলো কোনো না কোনোভাবে আমার মধ্যে ছাপ ফেলে গেছে। কোন নাটকে কখন কীভাবে সেগুলো বেরিয়ে আসে, সেগুলো আমি তো ঠিক ধরতে পারি না।

( দেবাশিস মজুমদারের নেওয়া বিভাস চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকারের একটি অংশ)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “Bivas Chakrabarty : Sakkhatkar”

Your email address will not be published. Required fields are marked *