Description
“রোদের কুসুম-কুসুম উত্তাপে পয়রনবিবি কচ্ছপের মতো কুঁজো পিঠটা উদোম করে বসে ছিল। আসন্ন শীতের সকালে সূর্যের তেজে কীরকম ভাটা পড়তে শুরু করেছে! ফলে আলোর রূপালি রং খানিকটা এদিক-সেদিক গলে যেয়ে বাদামিঘেঁষা হয়ে উঠেছে। আলোর এই যে ম্যান্দা-মেরে-যাওয়া– তা
পয়রনবিবির বয়সি চক্ষুকে ধোঁকা দিতে পারে না। অবশ্য পারবেই-বা কীভাবে? কতকাল ধরে তার চক্ষু দুইটা তো খালি রং বদলের খেলাই দেখল। আবরুহীন পডিঘরের ভেতর তো তাকে কেবল আলোর বাড়-কামের হিসাব রাখতেই হল। না রাখলে চলত কীভাবে? ওই আলোর হিসাব-নিকাশ করেই তো তাকে শাড়ির জমিনে কাণ্ডুল চালাতে হয়েছে। বুটা, জাল অথবা তেসরি নকশা বুনতে হয়েছে। সবেদ আলির সঙ্গে নিকাহের পর-পরই তো তাকে পডিঘরের চালের নীচে বসতে হয়েছিল। তাঁতের ঝাঁপ ধরতে ধরতে তার ডাইনে-বামে তাকানোর অবসর হয়নি। আকছার মাকুর খেও মেরে কাপড় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সংসার বেড়ে গিয়েছিল। মোষের শিঙে বানানো চকচকে কালো কাণ্ডুল হাতে নিয়ে পয়রনবিবি প্রথম দিকে কম অবাক মানত না! হায় রে! এই পিরথিমীতে কত কিছুই-না আশ্চিয্য ঘটবার নাগছে। তারবোয় বাপের বাড়িতে থাকবার সমুয় মইষের পাল দেখ্যা বুকের ভিতরটায় সত্যি সত্যি ডর ধরত। ইয়া আল্লাহ!”
বিষয়ের নিরিখে এই উপন্যাস একটি জীবন্ত উদাহরণ। জামদানী তাঁতশিল্প এবং এই শিল্প বা পেশার সঙ্গে জড়িত রক্তমাংসের মানুষগুলোকে নিয়ে এই উপন্যাসের চরিত্রায়ন, বিষয় এবং ভাষা। শব্দের প্রতিটা আঁচড়ে আছে লেখিকার মনন, দর্শন এবং প্রাত্যহিকি যাপনের সূক্ষ্ম বোধগুলি।
Reviews
There are no reviews yet.