Description
মানব সভ্যতার ইতিহাসের অধিকাংশটাই ক্ষমতা লাভ ও প্রতিশোধের যুদ্ধে রক্তরঞ্জিত। রাজনৈতিক চক্রান্তে ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতিকে বার বার যুদ্ধের ইন্ধন রূপে ব্যবহার করা হয়েছে । আবহমান কাল ধরে চলতে থাকা এই লড়াইয়ে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে সাধারণ কিছু মানুষ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি শত্রুপক্ষের গোপন স্ট্রাটেজি জানার জন্য বিভিন্ন দেশে গুপ্তচর নিয়োগ করেছিল। ব্রিটেনের সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস অথবা MI6, জার্মানির ‘Abwehr’, জাপানের সামরিক ইন্টেলিজেন্স ‘কেম্পিটাই’, আমেরিকার G2 এবং ‘ব্ল্যাক চেম্বার’ ছাড়াও ইতালি, সুইডেন প্রভৃতি দেশের নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স সংগঠন ছিল। তাছাড়া মিত্রশক্তির যৌথ গুপ্তচর সংগঠন ‘AIB’ তো ছিলই।
পরবর্তীতে গুপ্তচরবৃত্তি ও গোপন ইন্টেলিজেন্স সংগঠকদের প্রভাব দ্রুত বাড়তে থাকে। ইজরায়েলের মোসাদ, জার্মানির বিএনডি (BND), ভারতের র (RAW), চিনের এমএসএস (MSS) প্রভাব বিস্তার করে সারা পৃথিবীতে।
নয়ের দশকে গুপ্তচরদের এই জগতে আমূল পরিবর্তন হয়। কম্পিউটার ও সাইবার ক্রাইমের যুগে কর্পোরেট, ব্যাঙ্ক, তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে অর্গানাইজড ক্রাইম। রাজনৈতিক অবস্থার বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীরা জাঁকিয়ে বসেছে নানা জায়গায়।
এমনই এক সময়ে তেল আবিব শহরে এক আত্মঘাতী সন্ত্রাসবাদী হামলায় মারা যান সাংবাদিক সালোম ইলানি। ইজরায়েল সিক্রেট সার্ভিস মোসাদ অনুসন্ধান করে জানতে পারে এরকম নানা আক্রমণের পরিকল্পনা করছে একাধিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। আল কায়দা, বোকো হারাম, আইসিস-এর মতো সন্ত্রাসবাদীদের হাতে বেআইনি অস্ত্র চলে আসছে মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকার ড্রাগ কার্টেল এবং মানি লন্ড্রারিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।। এই নেটওয়ার্ক নিয়েই অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন সালোম।
মধ্য-পূর্বের গৃহযুদ্ধ ও জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে বিশ্বের নানা দেশ। আবু বকর আল-বাগদাদির আইসিস-এর বিরুদ্ধে যৌথ সামরিক আক্রমণ যেমন চলছে, তেমনই চোখের আড়ালে কার্যকর হচ্ছে একাধিক রাষ্ট্রের গোপন ইন্টেলিজেন্স অপারেশন।
ইজরায়েলে নিহত সাংবাদিকের মেয়ে ইয়োনা আমেরিকায় ডিইএ-তে নারকো সন্ত্রাস রুখতে কাজ করছে। ঘটনাচক্রে ডিইএ থেকে বরখাস্ত হয়ে অগাস্ট স্প্লেটিয়ারের সঙ্গে দেখা করতে আসে ভারতের কাসোলে। সেখান থেকে ফিরে নারকো মাফিয়া আর মধ্য-পূর্বের সন্ত্রাসবাদী দলের মধ্যে আর্থিক লেনদেন ও অস্ত্রের চোরাকারবার রুখতে সে মোসাদের হয়ে কাজ শুরু করে। রহস্যজনকভাবেই সালোমের তদন্ত সম্পর্কে কিছু গোপন সূত্র গ্লোবাল সংগঠন ওয়ার্ল্ড উইদাউট রিপোর্টার্স-এর হাতে আসে। এই তদন্তে জড়িয়ে পড়ে পিটার, নাসের এবং ভিনসেন্টের মতো সিস্টেমের বাইরে থাকা কিছু মানুষও। শুরু হয় অপারেশন ব্ল্যাক অ্যারো।
একদিকে বিশ্বব্যাপী ড্রাগ কার্টেল এবং মানি লন্ডারিং-এর পদ্ধতি, অন্যদিকে সালোমের হত্যা রহস্যের সমান্তরাল তদন্ত চলতে থাকে। অনুসন্ধান যত এগোতে থাকে, বোঝা যায় অস্ত্র, অর্থ আর সন্ত্রাসের শিকড় ছড়িয়ে আছে সারা পৃথিবীতে। সালোমের তদন্তের যাবতীয় তথ্য ধরে এগোতে গিয়ে একসময় ঠিক-ভুল, বাস্তব-অবাস্তবের দূরত্ব কমে আসতে থাকে তাদের কাছে। রাজনৈতিক চক্রান্ত, ইন্টেলিজেন্স প্রসিডেরাল আর সন্ত্রাসের এই টানাপোড়নে যখন ছড়িয়ে থাকা সূত্রগুলো জুড়তে শুরু করে তখনই প্রাণঘাতী আক্রমণ নেমে আসে ইয়োনার ওপর। কোনোক্রমে পালিয়ে বাঁচে সে। কে বা কারা মারতে চায় ইয়োনাকে? কোথায় পালিয়ে যায় সে? এই সাংঘাতিক ষড়যন্ত্রে তার ভূমিকাই বা কী? কে এই অগাস্ট স্প্লেটিয়াস? নাসের এবং ভিনসেন্টের প্রকৃত পরিচয়ই বা কী? শেষ পর্যন্ত কি সফল হল অপারেশন ব্ল্যাক অ্যারো?
সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার।
Reviews
There are no reviews yet.