Description
সব মানুষেরই থাকে এক সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম। সে মোকামের ঠিকানা একেকজনের একেক রকম। কেউ বা প্রযত্নে থাকে মঠ-মন্দির-মসজিদ-গির্জার, কেউ বা আবার গগনচুম্বি অট্টালিকার, সাতমহলা বাড়ির, ধন-ঐশ্বর্যের চোখধাধানো সমারোহের। আমার সিদ্ধিগঞ্জের মোকামখানা রয়েছে আমার হৃদয়েশ্বরী জলেশ্বরীর কোলের মধ্যে। সেখানে ভূপ্রকৃতির ইতিহাস নবীন কিন্তু মানুষ প্রাচীন। সে এখনও আধুনিকতার ধরতাই-এ হাটি হাটি পা পা। তার কথার লব্জে, চলার ছন্দে সামন্ত-পরম্পরার শ্লথ ভাবটি এখনও প্রবল। তথাপি হৃদয়বৃত্তের অলখ বলয়ের সাতরঙের হাতছানিতে সে আমাকে পৌছোয় যে স্থানে, সেই আমার মোকাম-আমার সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম। সেই মোকামের সওদাগর আমি। ফকিরসাব, মোকছেদ, কার্তিক এবং সর্বশেষ, হ্যা—আমার শেকড়ের শেকড়, পিতৃকল্পপুরুষ ছোমেদ, আমার মহাজন। প্রত্যেক পরম্পরায়ই একজন বীজপুরুষ থাকে। তাকে ঘিরে থাকে তার পুষিপোনা-শিষ্যশাবকেরা। এখানে এই রচনায় উপস্থিত যে-সব মানুষ, তারা সবাই ফকিরসাব, মোকছেদ, কার্তিক এবং ছোমেদের শিষ্যশাবক, পুষিপোনা। এরা কেউই কথাকারের সৃষ্ট একান্ত কাল্পনিক চরিত্র নয়। আমি এমত বলতে বা শপথ করতে পারব না যে, “এই উপন্যাসের পাত্রপাত্রীরা সবাই সম্পূর্ণ কাল্পনিক চরিত্র, যদি কোনও বাস্তব ঘটনা বা চরিত্রের সঙ্গে এর কোনও মিল পাওয়া যায়, তা নিতান্ত আকস্মিক” । না, এ-রকম বলার কোনও উপায় আমার নেই। কেননা এরা সবাই বাস্তব চরিত্র সবাই জীবিত, এমনকী এইসব নামেই। লেখাও হল তাদের কথ্যপাঠ অনুসারেই। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল, এই ছ’-বছরে একবার করে হলেও শারদীয় উৎসবের সময় আমার এই উজানযাত্রা ঘটেছে।
Reviews
There are no reviews yet.