Description
বাঙালির সামাজিক ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ সময় – উনিশ শতকের অন্যতম মুখ ‘বাবু’। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতকের এক সন্ধিক্ষণে তাঁরা দেখা দিয়েছিলেন বাঙালির ভাগ্যাকাশে। মূলত ” রাজদন্ডধারী” বনিক ইংরেজদের ছত্রচছায়ায় ও প্রশ্রয়ে মাথা তোলা বাবুদের দল এরপর রূপ-রূপান্তরের হাত ধরে এক থেকে বহু হলেন। বাংলার সামাজিক জীবনে তাঁদের সেদিন নানা ভূমিকা। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেল ইতিহাস। এককালে যে বাবরা মুখে মুখে মাথা কাটতেন, তাদের সাবেকি বড়ামানুষ “কবলানোর” দিন ফুরালো। দু’চার পাতা ইংরেজি পড়ে কেউ কেউ হয়ে পড়লেন ‘ মেকী বাবু’, কেউ বা অন্ত-পরিণামে নিছক কেরানি। তাঁরা বদলালেন,কিন্তু হারিয়ে গেলেন না। আমাদের সংস্কারে,মানসিকতায়,জীবনাচারণে আমরা বহন করে চললাম তাঁদেরই উত্তরাধিকার। বস্ত্তত, বাঙালির উনিশ শতকীয় ইতিহাসে বাবুদের নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে, যত শিল্প-সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে,অন্য বিষয়ে ততটা নয়। স্বাভাবিকভাবেই উত্তরকাল বারেবারে দেখতে চেয়েছে তাঁদের – কখনো সে-দৃষ্টি কৌতূহলের, কখনো নিছক রম্য-রচনা কিংবা উপহাসের।সাম্প্রতিককালে ছোট প্রবন্ধের পরিসরে ‘বাবু’ -দের নিয়ে সিরিয়াস গবেষণার দেখা দু’চারটি মিললেও বেশিরভাগেরই মেজাজ হালকা। অন্যদিকে সিরিয়াস আলোচনা গুলিকেও পূর্ণাঙ্গ বলা যায় না কোনমতেই। বাবু-বিষয়ক দেশী-বিদেশী বিপুল রচনা,ছড়া-ধাঁধা -প্রবাদ-প্রবচন ইত্যাদি লোকায়ত সংস্কৃতি, শিল্প-স্থাপত্য-এ-সবের আলোকে বাবু-ইতিহাসের রূপনির্মান অনেকটা অবহেলিত থেকে গেছে এখনও পর্যন্ত। বাবু-বিষয়ক বিপুল সাহিত্যধারা ও সংস্কৃতির আনাচ-কানাচ সাধ্যমতো মন্থন করে লেখা বক্ষ্যমান গ্রন্থটি।
Reviews
There are no reviews yet.